সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বৃহত্তম একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী এই ব্যাংকের নাম করণ করা হয় সোনালী ব্যাংক পিলসি নামে। যা ২০২৩ সালে নামটি পরিবর্তন করা হয়। সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় রাজধানী ঢাকার মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত। সোনালী ব্যাংক ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সোনালী ব্যাংক বর্তমানে সারাদেশে ১২২৮ (কম বেশি হতে পারে) রয়েছে। তবে এই ১২২৮টি শাখার সকল শাখাই অনলাইন। বিপুল পরিমাণ কর্মচারী সোনালী ব্যাংকে কাজ করেন। সোনালী ব্যাংক সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে গত ১৯৭২ সাল হতে আশা করা যায় আগামীতে তারা এরকম উওম সেবা প্রদান করবে। কৃষক,ছাএ, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে বা সকল পেশার মানুষকে সমান সুযোগ দেওয়া সোনালি ব্যাংকের লক্ষ্য। আজকের পোস্টে আমরা সোনালী ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। নিচে সোনালী ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে:
সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ সোনালি ব্যাংকের শাখায় যেতে হবে। তবে আপনি সর্বদা চেষ্টা করবেন যে আপনি সে স্থানের বাসিন্দা সে স্থানের সোনালী ব্যাংকের শাখায় একাউন্ট তৈরি করার। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করতে সেকল ডকুমেন্টস বা কাগজপএ দরকার হয় তা হলো:
- নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র/ পার্সপোট/জন্মনিবন্ধন সনদ
- দুই কপি পার্সপোট সাইজের রঙিন ছবি (সম্প্রতি তোলা হয়েছে এমন)
- নমিনি (নমিনির জাতীয় পরিচয় পএ ও এক কপি ছবি)
- আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশি হতে হবে জাতীয়তা হিসেবে।
- একাউন্ট তৈরি করার জন্য নির্ধারিত টাকা।
সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখায় আপনি যাবার পর তাদের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তারা আপনাকে ফর্ম দিবে আপনি ফর্মটি সঠিক ভাবে পূর্ণ করে নির্ধারিত কত টাকা জমা দিতে হবে এটি ব্যাংকে জমা করলে তারা আপনাকে একাউন্ট তৈরি করে দিবেন।
সোনালী ব্যাংকের একাউন্টের ধরন
সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকের উপর ভিওি করে একাউন্টের ধরণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এসকল একাউন্ট হলো:
- সোনালী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট
- স্টুডেন্ট সেভিংস একাউন্ট
- সোনালী ব্যাংক স্যালারি একাউন্ট
ইত্যাদি ধরনের একাউন্ট
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট এর সুবিধা ২০২৩
অন্য সকল ব্যাংকের মতো সোনালী ব্যাংকে রয়েছে বিভিন্ন সুবিধা। আপনি যদি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করেন তাহলে আপনি যে সকল সুবিধা পাবেন তা হলো:
- সেভিংস একাউন্টে হলে আপনি ৬.৫% পর্যন্ত ইন্টারেস্ট বা মুনাফা পেতে পারেন।
- আপনি আপনার একাউন্টের জন্য চেকবই এর সুবিধা নিতে পারবেন ।
- ডেবিট কার্ডের আবেদন করতে পারবেন।
- খুব তারাতাড়ি বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণ করতে পারবেন।
- অনলাইনে দ্রুত টাকা পাঠানোর সুবিধা।
- অ্যাপস এর মাধ্যমে বিভিন্ন সুবিধা পাবেন নিজে ঘরে বসে।
সোনালী ই-সেবা অ্যাপ
সোনালী ব্যাংকের অ্যাপ সুবিধা আসার পর থেকে সবকিছুর ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে আমরা আমাদের প্রয়োজনে App ব্যবহার করে সুবিধা গ্রহণ করতে পারছি Apps থেকে। কাউকে টাকা পাঠানো কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির টাকা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সোনালী ই ওয়ালেট /Solani E Wallet Apps
সোনালী ব্যাংক ডিজিটাল লেনদেন ও গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নতুন একটি এনড্রয়েড এপ্লিকেশন তৈরি করেছে। এই এপস টি গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায়।
সোনালী ই ওয়ালেট এপস ডাউনলোড করতে প্লে স্টোরে গিয়ে Sonali E Wallet লিখে সার্স করে ইন্সটল বাটনে ক্লিক করলেই আপনার ফোনে এপস টি ইন্সটল হবে।
সোনালী ই ওয়ালেট এপস এর সুবিধা:
১. এই এপস ব্যবহার করে আপনি মোবাইল ফোনে রিচার্জ করতে পারবেন।
২. যে কোনো সোনালী ব্যাংক একাউন্ট এ ইন্সটান্ট টাকা পাঠাতে পারবেন।
৩. চেক ছাড়াই যে কোন ব্রাঞ্চ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
৪. আপনার সোনালী ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংক এ টাকা পাঠাতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংকে লোন সুবিধা
অনেকে রয়েছেন যাদের জীবন যাএার মান ততটাও উন্নত নন যারা চাকরি, ব্যবসা ও ক্ষুদ্র ব্যবসা করে থাকেন। তাদের জন্য তাদের জীবন যাএার মান উন্নয়নের লক্ষ্য সোনালী ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। সোনালী ব্যাংকে সাধারণত সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা থেকে একটি নিদিষ্ট পরিমান অর্থ লোন নেওয়া যায় একটি নিদিষ্ট সময়ের জন্য। এই নিদিষ্ট সময়ে আপনাকে লোনের অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র
সঞ্চয়পত্র বর্তমান সময়ে আর্থিক নিরাপত্তা প্রধান উপায়। যারা সাধারণত কাজ করতে পারে না। তারা সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করতে পারেন। সোনালী ব্যাংক তার গ্রাহককে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা প্রধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকে। আপনি সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখা থেকে সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। সংগ্রহ করার জন্য আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস লাগবে। আপনি সঞ্চয়পত্র মাত্র ১০০০০ টাকা থেকে আপনার সাধ্য পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
আপনি সোনালী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনি ফর্ম পূর্ণ করে প্রয়োজনীয় কাগজ পএ ও অর্থ জমা দিলে আপনার সঞ্চয়পত্র কেনা হয়ে যাবে।
সোনালী ব্যাংক ডিপিএস
আগামী ভবিষ্যৎ জীবনকে আরো সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য ডিপিএস সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর টাকা সঞ্চয় করার নির্ভর যোগ্য স্থান হলো ব্যাংক। সোনালী ব্যাংক ডিপিএস সুবিধায় ৬% থেকে ৮% পর্যন্ত মুনাফা প্রদান করে থাকেন ডিপিএস এর প্রকার ভেদে। যে সকল ধরনের ডিপিএস সোনালী ব্যাংকে রয়েছে তা হলো:
- সোনালী সঞ্চয় স্কিম
- শিক্ষা সঞ্চয় স্কিম
- চিকিৎসা সঞ্চয় স্কিম
- পল্লী সঞ্চয় স্কিম
- বিবাহ সঞ্চয় স্কিম
- অনিবাসী আমানত স্কিম
- সোনালী ব্যাংক অবসর সঞ্চয় স্কিম
- সোনালী ব্যাংক মিলিওনিয়ার স্কিম
- স্বাধীন সঞ্চয় স্কিম
এসকল ডিপিএস ছাড়াও সোনালী ব্যাংকে আরো ডিপিএস এর প্রকার থাকতে পারে। আপনি উক্ত শাখায় যোগাযোগ করে জানতে পারবেন।
শেষকথা
আশা করি আপনি সোনালী ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি সঠিক তথ্য সমূহ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।