ধারাবাহিক মূল্যায়ন: প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন ও শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০২৩

Posted on
Advertisement
Reading Time: 4 minutes

ধারাবাহিক মূল্যায়ন: প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর শতভাগ ধারাবাহিক মূল্যায়ন, মূল্যায়নকৃত তথ্য শিক্ষক ডায়েরি-১ ও ডায়েরি-২ এ সন্নিবেশ পূর্বক শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরির সাধারণ নির্দেশনা:

১. প্রথম শ্রেণিতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে সামষ্টিক মূল্যায়ন বা কোনো আনুষ্ঠানিক লিখিত পরীক্ষা নোয়া ঘাবেনা। ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক শিখন অগ্রগতি সুলায়ন করতে হবে। শিক্ষক শিখন-শেখানো কার্যক্রমের শুরুতে, কার্যক্রম চলাকালীন বা পাঠ শেষে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করবেন

২। প্রথম শ্রেণির শিক্ষক সহায়িকার শেষে ধারবাহিক মূল্যায়ন নিদেশিকা সংযুক্ত রয়েছে। নির্দেশিকায় ধারাবাহিক নূল্যায়ন কৌশল ও রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য শিক্ষক ডায়েরি-১, শিক্ষক ডায়েরি-২ এর বাবহার এবং শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রস্তুতের পদ্ধতি বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

শিক্ষক সংশ্লিষ্ট মূলায়ন নির্দেশিকা অনুসরণ করে ভায়েরি-১ ও ডায়েরি-২ সাময়িকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠাপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর ওয়েবসাইটে প্রথম শ্রেণির সকল বিষয়ের শিক্ষক ভায়েরি-১ ও ভায়েরি-২ এর এমএস ওয়ার্ড ও পিডিএফ কপিসহ উক্ত নির্দেশিকাটি আপলোড করা আছে। ওয়েব সাইট থেকে সফট কপি ডাউন লোড করে তাতে প্রথম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর রোল ও নাম কম্পোজ করে প্রিন্ট করে নেবেন। কম্পোজ করা সম্ভব না হলে স্পষ্ট অক্ষরে হাতে লিখে নিতে হবে।

৩।  প্রধান শিক্ষক তার বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুসারে প্রতিটি বিষয়ের জনা প্রয়োজনীয় সংখ্যক পৃষ্ঠা প্রিন্ট/ফটোকপি করে নেবেন। এক্ষেত্রে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যার চেয়ে নীচে আরো ৫/১০টি খালি সারি করে নেবেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে আরো নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে। প্রধান শিক্ষক/সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সারা বছরের জন্য অথবা ১ম ২য় ও ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন এর জনা শিক্ষক ভায়েরি-১ ও ডায়েরি-২ আলাদা আলাদা ভাবে সংরক্ষণ করবেন এবং পরবর্তীতে বাধাই করে নেবেন।

৪. প্রথম শ্রেণির প্রতিটি বিষয়ের জনা (যথা: বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান ও প্রাথমিক বিজ্ঞান সমদ্থিত, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, খ্রিস্ট ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং শিল্পুকলা) শিক্ষক ডায়েরি-১ ও শিক্ষক ভায়েরি”২ প্রস্তুত করতে হবে।

শিক্ষক ডায়েরি-১

শ্রেণি কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও ফলানর্তন প্রদানের জনা ডায়েরি-১ এবং শিক্ষার্থীদের পাঠ/অধ্যায়/ইউনিটভিত্তিক অর্জন উপযোগী যোগ্যতা অর্জনের বিবরনীর জন্য ডায়েরি-২ ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষক ডায়েরি-১ এর সংরক্ষিত তথ্য বা মানসমূহ প্রতিটি পাঠ/অধ্যায়/ইউনিট শেষে শিক্ষক ডায়েরি-২ এ লিপিবদ্ধ করতে হবে এই কাজ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকবৃন্দ সুবিধাজনক সময়ে করবেন।

অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন

শ্রেণি কক্ষে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন একটি পাঠে করতে না পারলে পরবর্তী পাঠের সময়ে অবশিষ্টদের মূল্যায়ন করতে পারবেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রতি পাঠে কোনো শিক্ষার্থীকে মুল্যায়ন করতে না পারলেও এ অধ্যায়ের পাঠদান কালে অন্তত একবার হলেও মূল্যায়ন করতে হাবে। একটি অর্জন উপযোগী যোগ্যতার অথবা অধ্যায়ের পাঠদান কালে শ্রেণির প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন একবার হলেও মূল্যায়নের আওতায় আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীরা যাতে মূল্যায়ন থেকে বাদ না যায় সেদিকে লক্ষা রাখতে হবে।

মূল্যায়ন নির্দেশকের মানদণ্ড

শিক্ষক সহায়িকাতে প্রতিটি পাঠ/পিরিয়ড/সেশন শেষে ছকের সাহাযো জান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মুলাবোধ সম্পর্কিত মূল্যায়ন নির্দেশক সমূহ চিহ্নিত করা আছে। উল্লেখা, যে পাঠে/অধ্যয়ে/ইউনিটে যতগুলো পিরিয়ড বা ক্লাস আছে চিক ততগুলো মূল্যায়ন নির্দেশক রয়েছে। তবে ১ম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের যে পাঠে শিখনফল নেই (যেমন- পাঠ ২, ৫, ৭) সেই পাঠে কোনো মুলায়ন নির্দেশক নেই কারণ মূল্যায়ন নির্দেশকের মানদণ্ডগুলো সুলত শিখনফলের আলোকে লেখা হয়েছে।

শিক্ষার্থীর শিখনফল অর্জনের নির্ধারিত মান হলো

  • পারেনি (০),
  • আংশিক পেরেছে (১),
  • পেরেছে (২)

তবে কোনো শিক্ষার্থী ‘শূন্য’ পেলে তাকে ফলাবর্তনের মাধ্যনে কমপক্ষে “আংশিক পেরেছে’ পর্যায়ে উন্নীত করতে হবে। প্রান্তিক শেষে শিক্ষার্থীর বিষয় ভিত্তিক অর্জন উপযোগী যোগ্যতা অর্জনের নির্ধারিত নম্বর/মান হলো:

  • ০-৩৯% (সহায়তা দরকার)
  • নম্বর/মান ৪০-৫৯% (সন্তোষজনক),
  • নম্বর/মান ৬০-৭৯% (ভালো),
  • নম্বর/মান ৮০-১০০% (উত্তম)

ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি ২০২৩

ক) শিক্ষক ধারাবাহিক মূল্যায়ন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ফলাবর্তন প্রদান করবেন। উপস্থাপিত পাঠটি শেষ হলে বা শিক্ষকের সু. সময়ে ফলাবর্তন তথা শিক্ষক ডায়েরি-১ এ লিপিবদ্ধ করতে হবে৷ শিক্ষক ‘পারেনি’ শিক্ষার্থীদের শিখনফল অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ফলাবর্তন প্রদান করবেন।

খ) বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুসহ পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন এবং শিখন দুর্বলতা নিরাময়ের জন্য ফলাবর্তন প্রদানে শিক্ষক বিশেষ যত্নবান হবেন।

গ) ফলাবর্তন ও শিখনফল অর্জনের মান শিক্ষক ডায়েরি-১ এ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথমে পেন্সিল দিয়ে লেখা সমীচীন। কারণ যে সকল শিক্ষার্থী ১ এবং ০ পাবে তাদের ফলাবর্তন প্রদানপূর্বক পরবর্তী শিখন অগ্রগতির মান অর্থাৎ ১ কে ২ এবং ০ কে ১ বা ২ এ উন্নীত করতে হবে। এক্ষেত্রে পেন্সিল দিয়ে লেখা হলে সেটি মুছে আবার সহজে লেখা ঘাবে। এখানে উল্লেখা যে, শিক্ষক সহায়িকাতে পূব পাঠের আলোচনা ও পুনরালোচনা ক্লাসের সুযোগ রাখার কারণে ফলাবর্তন প্রদানেরও পর্যাপ্ত সুযোগ শিক্ষাকের রয়েছে৷

উল্লেখ্য, পাঠের শেষের দিকের পিরিয়ডের মূল্যায়ন নির্দেশক পুরণ করতে গিয়ে অনেক সময় দেখা যাবে শিক্ষার্থীরা ইতিমধো প্রথম দিকের পিরিয়ডের মূল্যায়নের মাধ্যমে শিখনফল অর্জন করে ফেলেছে। এক্ষেত্রে শিক্ষক ভায়েরি-১ এ পূর্বে পেন্সিল দিয়ে লেখা উক্ত শিক্ষার্থীদের তথ্যটি সংশোধন করতে হবে। সে অনুযায়ী ধারাবাহিক মূল্যায়নে শিক্ষক শিক্ষার্থীর সর্বশেষ ফলাফল সংরক্ষণ করবেন এবং তা নির্দিষ্ট পাঠ শেখে শিক্ষক ভায়েরি-২ এ লিপিবদ্ধ করবেন।

প্রান্তিক শিখন অগ্রগতি রিপোর্ট কার্ড

  • ধারাবাহিক মূল্যায়ন কার্যক্রম সুষ্ঠ ও কার্যকরভাবে পরিচালনার সুবিধার্থে শিক্ষক ও একাডেমিক সুপারভাইজারদের আবশাকীয় শিখনক্রম, শ্রেণিভিত্তিক অঞ্জন উপযোগী যোগ্যতা, শিক্ষক সহায়িকায় বর্ণিত পাঠ বিভাজন ও পাঠ পরিচালনা সংক্রান্ত নির্দেশনা, মূল্যায়ন নির্দেশকের (জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মুলাবোধ) খারণা এবং মূল্যায়ন রেকর্ড ঢুলস (শিক্ষক ডায়েরি-১, শিক্ষক ডায়েরি-২ ও প্রান্তিক শিখন অগ্রগতি রিপোর্ট কার্ড) সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
  • প্রয়োজনে বিষয়গুলো নিয়ে সহকর্মী, সংশ্লিষ্ট সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
  • প্রতি প্রান্তিক শেষে প্রধান শিক্ষক/সংশ্লিষ্ট শিক্ষক প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য শিখন অগ্রগতির প্রতিবেদন (রিপোর্ট কার্ড) তৈরি করবেন।
  • অগ্রগতি প্রতিতে নমুনা শিক্ষক সহা মূল্যায়ন নির্দেশিকার শেষে দেয়া আছে। প্রদন্ত মূল্যায়ন নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি শিক্ষার্থীর জনা অগ্রগতির প্রতিবেদন (রির্পোট কার্ড) কপি/প্রিন্ট করে নেবেন।
  • শিক্ষকবৃন্দ এই রিপোর্ট কার্ডে কোনো নম্বর/মান বা গ্রেড উল্লেখ করবেন না। মূল্যায়ন নির্দেশিকায় বর্ণিত অবস্থান নির্দেশক মন্তব্য যা উত্তম/ভালো/সন্তোষজনক বা সহায়তা প্রয়োজন লিখবেন এবং শিক্ষার্থী/অভিভাবককে প্রদান করবেন।

ধারাবাহিক মূল্যায়ন নমুনা ছক

বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত বিষয়ের ধারাবাহিক মূল্যায়ন একটি করে নমুনা ছক (ডায়েরি-১ ও ভায়েরি-২) এবং শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়া উদাহরণসহ এতদসক্ষে সংযুক্ত করা হয়েছে।

উক্ত নির্দেশনার আলোকে শিক্ষক তাঁর বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও অগ্রগতির প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন।

Advertisement

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *