প্রাথমিক শিক্ষায় অনলাইন ই মনিটরিং ও মেন্টরিং কার্যক্রম

Posted on
Advertisement
Reading Time: 3 minutes

ই মনিটরিং ও মেন্টরিং: বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন অফিস (অফলাইন) এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে অনলাইন (e Monitoring) পরিবীক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পরিবীক্ষণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই মূলত: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়। আমরা জানি, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ সকল কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য হলো, সকল শিশুর জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের অফিস ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একাডেমিক, প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এসব কার্যক্রমের ফলপ্রসুভাবে বাস্তবায়নে পরিবীক্ষণ ও মেন্টরিং ব্যবস্থার উপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষায় অনলাইন ই মনিটরিং ও মেন্টরিং কার্যক্রম

কারণ পরিবীক্ষণ ও মেন্টরিং কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা না হলে গৃহীত কার্যক্রমসমূহ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন। সুতরাং প্রাথমিক শিক্ষার সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে পরিবীক্ষণ এবং মেন্টরিং ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও ফলপ্রসু বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা, এসডিজি-র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গৃহীত কার্যক্রমসমূহ সফলভাবে বাস্তবায়নে কার্যকর পরিবীক্ষণ ও মেন্টরিং ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই।

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনলাইন/অফলাইন মনিটরিং

মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনলাইন/অফলাইন পরিবীক্ষণ প্রমাপ, তথ্য প্রতিবেদন, ব্রডশীট মূল্যায়ন, হোয়াটসঅ্যাপ/ সরেজমিন পরিবীক্ষণের বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনায় পরিবীক্ষণ কার্যক্রম ফলপ্রসু করতে উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।

১. পরিবীক্ষণ গাইডলাইন অনুসরণ ও সঠিক পরিকল্পনা করা;
২. পূর্বপ্রস্তুতিসহ অফিস ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়মিত পরিবীক্ষণ করা;
৩. উপজেলাধীন দূর্গম/দূরবর্তী বিদ্যালয় পরিবীক্ষণ করা;
৪. শুধু প্রমাপ অর্জনের প্রতি গুরুত্ব প্রদান না করা;
৫. বিদ্যালয় পরিবীক্ষণকালে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত সময় দেয়া;
৬. পূর্ণাঙ্গ একাডেমিক পরিবীক্ষণ করা;
৭. শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ শেষে সঠিকভাবে ফিডব্যাক, সহায়তা ও মূল্যায়ন করা;
৮. বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর অর্জিত যোগ্যতা নিয়মিত যাচাই করা;
৯. নিয়মিত ফলোআপ করা;
১০. প্রতিবেদনে নির্দেশনা/পরামর্শ/মন্তব্য/সুপারিশসমূহ গতানুগতিক ও দায়সারাভাবে উপস্থাপন না করা;
১১. অধিক্ষেত্র অনুযায়ী প্রতিবেদনসমূহ মূল্যায়নপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
১২. পরিবীক্ষণ ও মেন্টরিং কার্যক্রম জোরদারকরণে আন্তরিকতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি;
১৩. পারস্পরিক সহযোগিতা ও আস্থার উন্নয়ন;
১৪. কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন;
১৫. অধিক্ষেত্র অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ;
১৬. সার্বিকভাবে মাঠ পর্যায়ে পরিবীক্ষণের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও পরিবীক্ষণ কার্যক্রম ফলপ্রসু করা।

প্রাথমিক শিক্ষায় অনলাইন মেন্টরিং

মেন্টরিং: কোন প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রমের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও গুণগত মান অর্জন নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত উদ্দেশ্যভিত্তিক, পদ্ধতিগত ও নিবিড়ভাবেভাবে পর্যবেক্ষণ করাই হলো পরিবীক্ষণ (Monitoring)। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ পরিবীক্ষণের অংশ।

READ MORE: প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা ২০২৩

মেন্টরিং বা সহায়তা প্রদান (Mentoring)

মেন্টরিং (Mentoring) হলো সহায়তা করা। Mentor শব্দের অর্থ বন্ধু, সহায়তাকারী, সহযোগী, পরামর্শদাতা ইত্যাদি। কোন কাজে সহযোগিতা করার প্রক্রিয়া হলো মেন্টরিং। • মেন্টরিং এর প্রধান লক্ষ্য হল Mentee-র পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং কাজের (মানসম্মত শিক্ষা) উৎকর্ষতা নিশ্চিত করা।

পরিবীক্ষণ পরিকল্পনা

যেকোন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হলে পরিকল্পনার বিকল্প নেই। তেমনিভাবে, কিভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় অফিস ও বিদ্যালয় পরিবীক্ষণ করা হবে তার পরিকল্পনা। পরিবীক্ষণ পরিকল্পনা মাসিক/ত্রৈমাসিক/ষান্মাসিক এবং বছরভিত্তিক হতে পারে। বছরের শুরুতেই এ ধরণের পরিকল্পনা হয়। পরিবীক্ষণ পরিকল্পনা উদ্দেশ্য হলো, পরিবীক্ষণ প্রমাপ এর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নির্ধারিত পরিবীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা। অফিস ও বিদ্যালয় পরিবীক্ষণের ক্ষেত্রে অনলাইন/অফলাইন পরিবীক্ষণ পরিকল্পনা প্রস্তুত করা যায়।

সমন্বিত পরিবীক্ষণ পরিকল্পনা

উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার/জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিজ অধিক্ষেত্রে কর্মরত সকল কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও মানসম্মত শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা করবেন। নিজ অধিক্ষেত্রে সকল প্রতিষ্ঠান ও জনবলকে সমন্বয় করে, সবল-দূর্বল, সুগম-দূর্গম, অগ্রসর-পিছিয়ে পড়া ইত্যাদি বিষয়কে বিবেচনায় রেখে সমভাবে বিভাগ/জেলা/উপজেলার সকল স্তরের কর্মকর্তাকে অন্তর্ভূক্ত করে এ পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে হবে।

পরিবীক্ষণ দর্পণ

পরিবীক্ষণ দর্পণ হচ্ছে পরিবীক্ষণ পরিকল্পনার বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন। মূলত: পরিকল্পনা হচ্ছে পরিবীক্ষণ পূর্ববর্তী এবং দর্পণ হচ্ছে পরিবীক্ষণ পরবর্তী কাজ। পরিবীক্ষণকারী কর্মকর্তা তার পরিকল্পনায় নির্ধারিত তারিখে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কোন কারণে পরিবীক্ষণ করতে না পারলে তার বাস্তব অবস্থা এ দর্পণে প্রতিফলিত হবে। প্রতিমাসে এ দর্পণ হালনাগাদ করে স্ব-স্ব দপ্তরে সংরক্ষণ করতে হবে।

মেন্টরিং পরিকল্পনার উদ্দেশ্য

  • উপজেলা/থানাধীন সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় (দূর্গম বিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে) ০৩ মাসে কমপক্ষে একবার পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা;
  • অনলাইন/অফলাইনে পরিবীক্ষণপূর্বক রিপোর্ট প্রদানকে উৎসাহিত করা;
  • পরিবীক্ষণকারী সকল কর্মকর্তার মধ্যে সমন্বয় সাধন ও সহযোগিতার মনোভাব তৈরি;
  • পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সকলের সমন্বয়ে পরিবীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা;
  • পরিবীক্ষণকারী কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের পূর্বপ্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ তৈরী করা;
  • সকল প্রতিষ্ঠান সমভাবে পরিবীক্ষণের আওতায় আনা;
  • পূর্বে পরিবীক্ষণকৃত বিদ্যালয়ে ফলোআপ পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা;
  • সকলের সমন্বয়ে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করা।
Advertisement

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *